ত্রাণের টাকা বন্যার্তদের না দিয়ে ব্যাংকে কেন রেখেছেন সমন্বয়করা?



     ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ নগদ অর্থ দিয়েছিলেন বন্যার্তদের ত্রাণ তহবিলে

        তারেকুজ্জামান শিমুল
          
           |ডেইলি নিউজ বাংলা, ঢাকা
            ১৭ সেপ্টেম্বর 
...............................................] 
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় আক্রান্তদের সাহায্যার্থে গত অগাস্টে গণত্রাণ সংগ্রহের ঘোষণা দিয়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অসংখ্য মানুষকে তখন ট্রাকভরে ত্রাণের মালামাল নিয়ে সমবেত হতে দেখা গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি)।

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ নগদ অর্থ দিয়েছিলেন ত্রাণ তহবিলে। ছোট-বড় অনেকেই তখন নিজের জমানো অর্থ দান করতে মাটির ব্যাঙ্ক হাতে হাজির হয়েছিলেন টিএসসিতে, যা দেখে কেউ কেউ আপ্লুতও হয়েছিলেন।

কিন্তু ত্রাণ তহবিলে জমা পড়া সেইসব অর্থ বন্যার্তদের সহায়তায় ঠিকঠাক ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেটি নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ধরনের আলোচনা চলছিলো।

আলোচনায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে যখন শনিবার সমন্বয়কদের বার্তা থেকে জানা গেছে যে, সংগৃহীত অর্থের বেশিরভাগই অব্যবহৃত অবস্থায় ব্যাংকে পড়ে রয়েছে।

“ব্যয় বাদে বাকি টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক শাখা, ইসলামী ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সংরক্ষিত রয়েছে,” শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে উল্লেখ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

মূলত এই পোস্টের পরেই ত্রাণ তহবিলের টাকার আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন মহলে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা।

বন্যার্তদের নামে টাকা তুলে কেন সেটি তাদের সহযোগিতায় ব্যয় করা হলো না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার “অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা হচ্ছে” বলেও অভিযোগ তুলছেন।

কিন্তু প্রকৃত ঘটনা আসলে কী? তহবিলের টাকা বন্যার্তদের সাহায্যে ব্যয় না করে ব্যাংকেই-বা রাখা হলো কেন?

আরও পড়তে পারেন:

          বন্যায় অনেক বাড়িঘর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে

তহবিলে আছে কত টাকা?

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি জেলার মানুষের জন্য টিএসসিতে গত ২২শে অগাস্ট গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি শুরু করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

পরবর্তী দুই সপ্তাহে ওই তহবিলে প্রায় ১১ কোটি ১০ লাখ টাকা জমা পড়েছিল। এর মধ্য থেকে এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের সহায়তায় খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

অবশিষ্ট প্রায় নয় কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

এছাড়া খাবার-দাবারসহ অন্যান্য যত প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ হয়েছিল, প্রায় ১৯১টি ট্রাকে করে সেগুলো বন্যাদুর্গত এলাকায় নিয়ে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

চলতি মাসের শুরু দিকে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত চৌঠা সেপ্টেম্বরের পর নতুন করে আর গণত্রাণ সংগ্রহ করা হয়নি বলেও প্লাটফর্মটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
      বন্যায় অনেক বাড়িঘর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে